Chandannagar Station Khalisani Sankarbati West Bengal
Chandannagar Station Khalisani Sankarbati West Bengal: চন্দননগর শব্দটি এসেছে চাঁদের নগর থেকে । কারণ গঙ্গা এখান দিয়ে বয়ে যাওয়ার সময় আদখানা চাঁদের মত বাকেট সৃষ্টি করে । আবার অনেকেই মনে করেন এখানে একসময় চন্দন কাঠের বড় ব্যবসা হতো। ফরাসিদের উপনিবেশ তৈরি হওয়ার পর অনেকেরই কাছে এটি ফরাসডাঙ্গা নামে পরিচিত হতে থাকে।
চন্দননগরের ইতিহাস
চন্দননগরের ইতিহাস: ঐতিহাসিকদের মতে চন্দননগর প্রধানত তিনটি গ্রাম মিলে তৈরি। দক্ষিণে গণ্ডলপাড়া, উত্তরে বড় কিসানপুর আর পশ্চিমে খলিসানি। আর মধ্যে চন্দননগরের নামটা ছিল চাকন্দশিরাবাদ । ১৬৯৬ সালের ২১ শে নভেম্বর ফরাসি রাজ কর্মচারীরা , কিছু রপ্তানি দ্রব্যের সম্ভাবনা কথা জানিয়ে ফরাসি ডিরেক্টর ক্যারন কে একটি চিঠি লেখে ।
সেই চিঠিতেই প্রথম চন্দননগর এই নাম ব্যবহৃত হয়। আরো একটি উল্লেখযোগ্য নামের উল্লেখ পাওয়া যায়। অন্যান্য জায়গায় তার নাম চরনগর । দুপাশের সরস্বতী আর হুগলি দিয়ে ঘেরা দুপাশে চরের মত জেগে ওঠা চরনগর।
১৬৮৮ সালে ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মোগল সুবেদারদের কাছ থেকে নেওয়া ৯৪২ হেক্টর জমি ৪০ হাজার সিক্কা টাকায় কিনে নে ফরাসি কুঠি বানানোর জন্য। ১৬৯৩ এর পর থেকে ফরাসি প্রতিপত্তি বাড়তে থাকে ধীরে ধীরে চন্দননগরে ।
Also Read- Click Here
ইউরোপিয়ান বাণিজ্যিক কেন্দ্র
ইউরোপিয়ান বাণিজ্যিক কেন্দ্র: ১৭৩০ সালে চন্দননগরের গভর্নর নির্বাচিত হন জোসেফ ফ্রন্টস। এনার আমলে ২০০০ পাকা বাড়ি তৈরি হয়। জনসংখ্যা ছাড়িয়ে যায় প্রায় এক লক্ষ । এই সময় চন্দননগর প্রায় কলকাতার চেয়েও বড় শহর হয়ে ওঠে । প্রায় 26 বছর ধরে জোসেফ ফ্রন্টস গভর্নর থাকাকালীন প্রায় গোটা বাংলার চন্দননগর ইউরোপিয়ান বাণিজ্যিক কেন্দ্র হয়ে ওঠে।
এখান থেকে প্রধানত রপ্তানি হতো রেশম, নীল, চাল। তার সময় বিভিন্ন সংস্কার মূলক কাজও হতে থাকে । যেমন হুগলি নদীর বাঁধ উঁচু করে বাধানো, দুর্গো সংস্কার। এ সময় চন্দননগরে আরেকজন বিত্তমান মানুষ ছিলেন ইন্দ্র নারায়ন চৌধুরী।
ইন্দ্র নারায়ন চৌধুরী
ইন্দ্র নারায়ন চৌধুরী: সপ্তদশ শতাব্দীর শেষের দিকে উনি যশোর থেকে চন্দননগরে মামার বাড়িতে আসেন। তারপর মামার বাড়ির আভিজাত্য ছেড়ে ফরাসিদের কোম্পানির চাকরিতে যোগ দেন। নিজের বুদ্ধির, জোরে খুব তাড়াতাড়ি চাকরিতে উন্নতি করেন তিনি।
চন্দননগরের নন্দদুলাল মন্দির তারই তৈরি । এ মন্দির থেকে রবার্ট ক্লাইভ পরবর্তী সময়ে অনেক ধন সম্পত্তি নিয়ে যান । মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের সঙ্গেও ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরীর সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ ছিল । ১৯৪৮ সালে ৮ই জুন ফরাসি সরকার ভারতীয় সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তিতে আসেন যে।
চন্দননগরের প্রশাসনিক দায়িত্ব গ্রহণ
তাদের উপনিবেশদের বাসিন্দারাই ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে নিজ- নিজ সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ১৯৪৯ সালে ১৯শে জুন চন্দননগরের নাগরিকরা ভারতের সঙ্গে সংযুক্ত হবার পক্ষে ভোট দেন। ১৯৫০ সালের দোসরা মে ভারতীয় সরকার চন্দননগরের প্রশাসনিক দায়িত্ব গ্রহণ করে।
চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পূজা শুরু নিয়ে মতামত আছে। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সঙ্গে ইন্দ্র নারায়ণ চৌধুরীর সম্পর্ক খুব ঘনিষ্ঠ ছিল। তাই ইন্দ্র নারায়ণের হাত ধরেই জগদ্ধাত্রী পুজোর শুরু হয় চন্দননগরে। এখানকার ব্যবসায়ীরা দুর্গাপূজা ঠিক মতো উপভোগ করতে পারত না ।
জগধাত্রী পুজো
জগধাত্রী পুজো: কারণ দুর্গাপূজার সময় তাদের যথেষ্ট ব্যবসায় চাপ থাকতো। তাই তারা ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরীকে তাদের এই অসুবিধার কথা জানান। যেহেতু ইন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী রাজা কৃষ্ণ নারায়ণ চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন । তাই তিনি রাজার উপদেশে চন্দননগরের বন্দরের কাছে প্রতিষ্ঠাতা করেন জগধাত্রী পুজো। যিনি এখন চন্দননগরের আদি মা । তারই ঠিক কিছু বছর পর এর আশেপাশে কাপড়ের পট্টিতে আরেকটি পুজো শুরু হয়।
Chandannagar Station Khalisani Sankarbati West Bengal
Pratidin24ghanta.com