Joto Moth Toto Path||যত মত তত পথ
Joto Moth Toto Path||যত মত তত পথ: যত মত তত পথ এই প্রবাদ বাক্যটির প্রবক্তা পরম পূজ্য শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব(Sri Sri Ramakrishna Paramahansadev)। যত মত তত পথ কথাটির অর্থ হল যতগুলো মদ আছে। তার ততগুলোই পদ আছে। এই বাক্যটির মধ্যে লুকিয়ে আছে অনেক রহস্য।
তার আগে আমরা জানবো যত মত তত পথ গল্পটি লেখক কে ?যত মত তত পথ গল্পটির লেখক স্বামী লোকেশ্বরানন্দ।স্বামী লোকেশ্বরানন্দ মহারাজ যিনি শ্রীরামকৃষ্ণের জীবনী(biography) সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে বর্ণনা করেছেন তার আলোচ্য বিভিন্ন প্রবন্ধে।
তিনি শ্রীরামকৃষ্ণের জীবনী লেখা দর্শন শাস্ত্র ইত্যাদি বিষয়বস্তু সম্বন্ধে বিস্তারিত লিখেছেন।স্বামী লোকেশ্বরানন্দ মহারাজ রামকৃষ্ণ মঠের এক সময় বিখ্যাত সন্ন্যাসী (A famous monk)ছিলেন।স্বামী লোকেশ্বরানন্দ মহারাজ শ্রীরামকৃষ্ণ মহাশয়ের বাক্যটি সম্পূর্ণভাবে বর্ণনা করেছেন।
Joto Moth Toto Path|| শ্রীরামকৃষ্ণ
Joto Moth Toto Path|| শ্রীরামকৃষ্ণঃ শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের জন্ম পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার(Hooghly district of West Bengal) একটি কামারপুকুর গ্রামে । তিনি কখনোই সেই ভাবে প্রথাগত শিক্ষায় শিক্ষিত হননি। তিনি পাঠশালায় গিয়েছিলেন কিন্তু প্রথাগত শিক্ষায় শিক্ষায় ব্যাবস্থিত হননি ।
তিনি চেয়েছিলেন নিজের মত করে শিক্ষা অর্জন করে নেওয়া। নিজের মত চারুকলা, মূর্তি গড়ার কাজ , ধ্যান যোগ ইত্যাদি সুকর্মে নিজেকে চালিয়ে নিতে চেয়েছিলেন। রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব মহাশয় সাধু সংঘ করতেন তিনি খুব সহজ সরল ভাবে মানুষকে তার কথা বোঝাতে পারতেন।
তিনি সহজ সরলভাবে (spiritual) বোধকে মানুষের সামনে তুলে ধরতে পারতেন। যদিও তার সংসারে অভাব সংকট ছিল। তিনি সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবান ছিলেন। তার এই ভাব মূর্তি দেখে অনেক লোক শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের কাছে তিতা গ্রহণ করতে যেতেন।
Joto Moth Toto Path||বাণীটির তাৎপর্য
Joto Moth Toto Path||বাণীটির তাৎপর্যঃ পরবর্তীকালে তার শিষ্য হিসাবে গ্রহণ করেন বিখ্যাত নরেন্দ্রনাথ দত্ত। যিনি যুক্তিবাদী জ্ঞানবাদী একজন মানুষ ছিলেন। যিনি পরবর্তীকালে স্বামী বিবেকানন্দ নামে পরিচিত । রামকৃষ্ণের আধ্যাত্মিক বোধ এ তথা দীক্ষায় নরেন্দ্রনাথ হয়ে উঠেছিলেন পরবর্তীকালে স্বামী বিবেকানন্দ(Swami Vivekananda)।
এবং তার মতাদর্শ প্রচার করে রামকৃষ্ণের অনুসারে সব ধর্মের লক্ষ্য এক। কিন্তু তার পথটি হলো আলাদা এবং শ্রীরামকৃষ্ণ কারো কোন ধর্মকে আঘাত না করে তার বাণীগুলিকে মানুষের সামনে প্রস্তুত করতেন। শ্রীরামকৃষ্ণদেবের মূল কথায় একটাই ছিল ঈশ্বর লাভ।
তাই তার ধর্ম মতের সার তত্ত্ব গুলি তিনি সকলের সামনে তুলে ধরেছিলেন। শ্রী রামকৃষ্ণদেবের যে অমৃত বাণী সেটাই পরবর্তীকালে।
শ্রী শ্রী কথামৃততে তার সেই বাণী লেখা রয়েছে। রামকৃষ্ণ মহাশয় বলেছেন যত মত তত পথ অর্থাৎ ধর্ম আলাদা আলাদা হলেও তার পথ আলাদা হতে পারে কিন্তু তার যে মূল লক্ষ্যটা কিন্তু এক সেটা হল ঈশ্বর দর্শন ঈশ্বর প্রাপ্তি । যত মত তত পথ বাণীর মধ্যে এটা বোঝানো চেয়েছি যে আমরা যেই পথ দিয়েই যাই না কেন অথবা যেই মত দিয়ে যাই না কেন কিন্তু তার অন্তিম সময়ে থামতে হচ্ছে। সেটা হলো ঈশ্বর দর্শন।
Joto Moth Toto Path|| মূল ব্যাখ্যা
Joto Moth Toto Path|| মূল ব্যাখ্যাঃ শ্রীরামকৃষ্ণের পরম সত্য বাণী যত মত তত পথ। এই বাক্যটি নানান ধরনের নানান নামে পরিচিত। শ্রীরামকৃষ্ণের পরম সত্য বাণী যত মত তত পথ এই বাক্যটি নানান ধরনের নানান নামে পরিচিত শ্রীরামকৃষ্ণদেবের সেই প্রসিদ্ধ উপদেশটি আমরা জানি।
যেখানে তিনি বলছেন একটি পুকুরের জল বিভিন্ন জন বালতি করে নিয়ে যায় ।তিনি এই বিষয়টি উপমার মাধ্যমে দিয়ে বলেছেন একজন ব্যক্তি একটি পুকুর থেকে বালতি করে জল নিয়ে যায়। কিন্তু আরও একজন বালতিতে করে জল নিয়ে যায় সে বলছে পানি ,
অন্য একজন বলছে ওয়াটার আরো অন্য একজন জল নিয়ে যায় সে বলছে একুয়া , কিন্তু বস্তুটা এক কিন্তু বস্তুটার নাম আলাদা হতে পারে। আমাদের শাস্ত্রে আছে সত্যি বস্তু বা পরম তত্ত্ব সেটা হল এক নানাভাবে তার বর্ণনা করা হয়।
এইসব বিষয় শাস্ত্রে থাকা সত্ত্বেও শ্রীরামকৃষ্ণ তার জীবনের অভিজ্ঞতা থেকেই পুনরুদ্ধার করেছেন বা প্রমাণিত করেছেন। শ্রী রামকৃষ্ণ দেবের দ্বিতীয় বক্তব্যটি ছিল পরম সত্য সাধারণ কথার এবং সাধারণ মনের অতীত পরম সত্যের আসল স্বরূপ কখনো ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয় তিনি বিদ্যাসাগর মহাশয় কে বলেছিলেন। সব জিনিস উচ্ছিষ্ট হয়ে গেছে কিন্তু ব্রহ্ম উচ্ছিষ্ট হয়নি। অর্থাৎ ব্রহ্মের বিষয়ে মুখ দিয়ে বা ভাষায় প্রকাশ করে বর্ণনা করা যায় না।
বিভিন্ন শাস্ত্রে যে ভাব প্রকাশিত সেগুলো কেবলমাত্র মত হিসাবে ব্যবহার হয় তবে এই সমস্ত মত মিথ্যা নয় কারণ সেগুলো পরম সত্যের কোনো না কোনো দিক প্রকাশ করে। তাই এই সমস্ত পরস্পর পরিপূর্ণ বলে মনে করা হয় কিন্তু বিরোধী মনে করা হয় না।
Also Read- Click Here
Joto Moth Toto Path||যত মত তত পথ
Joto Moth Toto Path||যত মত তত পথঃযেমন হিন্দু ধর্মের শাস্ত্রী আছে পরম সত্য ব্রহ্মকে অস্বীকার করা যায় না। ঈশ্বর কেবলমাত্র একজনই অন্য কেউ নেই। যেখানে মন যেতে পারে না তথা ভাষাও যেতে পারে না সেটাই হলো পরমব্রহ্ম এই সত্যের আসল স্বরূপ তথা ব্রহ্ম বাক্যের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যায় না।
বিভিন্ন শাস্ত্রে যে সমস্ত বিষয় মতের সম্বন্ধে বলা হয়েছে সেগুলি হল মত তবে সে সমস্ত মত যে ভুল তা বলা যায় না। কারণ সেগুলো পরম সত্যের কোনো না কোনো দিক প্রকাশ পায়। কিন্তু সম্পূর্ণ সত্যকে যে প্রকাশ করছে সেটা নাও হতে পারে ।
সেই জন্য এই সমস্ত মত পরস্পর পরিপূরক। যেরকম অন্ধের হস্তি দর্শনের উদাহরণ দিয়েছেন শ্রীরামকৃষ্ণ কয়েকজন অন্ধ একটা হাতিকে ডেকে এনে তারা অনুভব করছে হাতির স্বরূপ একজন অন্ধ বলছেন হাতি কুলোর মত কেউ বলছে ডালার মত আবার কেউ বলছে না না হাতি থালার মত। আরো একজন অন্ধ বলছে হাতি পাইপ এর মত। এইসব ব্যক্তিরা প্রত্যেকে ঠিক বলছে কিন্তু সেটা হল কেবলমাত্র আংশিক সত্য। শ্রী রামকৃষ্ণ বলেছেন এসব সম্পূর্ণ সত্য জানতে গেলে যোগ করতে হবে।
Joto Moth Toto Path||গীতা
Joto Moth Toto Path|| গীতা: বিভিন্ন জ্ঞানী ব্যক্তিদের অনুসারে যত মত তত পথ কথাটির অর্থ হল আপনি যেরকম পূজা করবেন সেই রকম ভাবি গন্তব্য স্থলে পৌঁছাতে পারবেন। আপনি যদি একটি বোকার মত গ্রহণ করেন তাহলে সেই রকম ভাবেই বোকার স্থানে যেতে পারেন।
গীতা অনুসারে শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন মানুষ যেরকম আরাধনা করবেন সেরকম গন্তব্যে যাবেন। যদি আপনি ইন্দ্রের পূজা করেন তাহলে ইন্দ্রলোকে পিতা মাতার পূজা করলে পিতৃ লোকে এরকম উদাহরণ দিয়ে গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বলতে চেয়েছেন। যেকোন মত বা পথে গেলে তার গন্তব্যস্থলটি দেখে নিতে হবে।