Upendrakishore Ray Chowdhury Biography || উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
Upendrakishore Ray Chowdhury Biography || উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী: বাংলার শিশু ও কিশোর সাহিত্যের অন্যতম কবি উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী বাংলা সাহিত্য জগতের অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি নাম। সাহিত্যিক সুকুমার রায়ের পিতা এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের ঠাকুর দাদা।
বিখ্যাত শিশু সাহিত্যিক, চিত্রশিল্পী এবং বাংলা মুদ্রণ শিল্পের অন্যতম প্রতিকৃৎ ছিলেন উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরত। তিনি ছিলেন খুবই মেধাবী এবং বুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তি। এক ধারে ছিলেন লেখক, চিত্রকর, প্রকাশক, জ্যোতিষী, ও সংগীত প্রেমী। তিনি প্রথম সন্দেশ পত্রিকা শুরু করেন যা পরে তার পুত্র সুকুমার রায় ও পৌত্র সত্যজিৎ রায় সম্পাদনা করেন।
জন্ম ও বংশ পরিচয়
জন্ম ও বংশ পরিচয়: ১৮৬৩ সালে ১০ই মে বাংলার ১২৭০ বঙ্গাব্দে ২৭শে বৈশাখ ময়মনসিংহ জেলার মসূয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম কালীনাথ রায় । তিনি আবার শ্যামসুন্দর মুন্সি নামক পরিচিত ছিলেন। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর পূর্ব নাম কামদা রঞ্জন রায়।মসুয়া গ্রামে প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন হরি কিশোর। হরি কিশোরের দুই স্ত্রী পরপর পরলোক গমন করেছিলেন।
এরপর তাদের সন্তান ছিল না। হরি কিশোর তৃতীয়বার বিবাহ রাজলক্ষ্মী দেবীকে তার সন্তান হলো না দেখে তিনি তার জ্ঞাতি ভাই কালীনাথ রায়ের ছেলেকে কামোদা রঞ্জন রায় কে দত্তক নিলেন রীতিমতো যাগ যজ্ঞ করে এবং নিজের নামের সাথে নাম মিলিয়ে দত্ত পুত্রের নাম দিলেন উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর প্রারম্ভিক পড়াশোনা আরম্ভ হল মসূয়া গ্রামের স্কুলে। স্কুলের শিক্ষকেরা সকলে খুব ভালবাসতেন উপেন্দ্রকিশোর কে। কারণ ছেলেটি ছিল প্রবল মেধা ও প্রতিভাশালী । কিন্তু স্কুল পাঠ্যক্রমে তার আগ্রহ ছিল না। এক অক্ষরেও সে পড়তো না। অন্যের শুনে পড়া মুখস্ত করত।
ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৮৮০ সালে উপেন্দ্রকিশোর প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বৃত্তি পান। তারপর কলকাতায় এসে ভর্তি হন প্রেসিডেন্সি কলেজে। সেখানে কিছু কাল অধ্যয়নের পর কলকাতায় মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। এবং ১৮৮৪ সালের সেখান থেকে বি এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
Upendrakishore Ray Chowdhury Biography
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী বৈবাহিক জীবন
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী বৈবাহিক জীবন: ১৮৮৬ সালে ২৩ বছর বয়সে উপেন্দ্রকিশোরের সঙ্গে বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রথম পক্ষের কন্যা বিধুমুখীর সাথে বিবাহ হয়, তখনকার কলকাতার কর্নওয়ালিস স্ট্রিটে অবস্থিত লাহাবাড়ি র দোতলায় কয়েকটি ঘর ভাড়া নিয়ে উপেন্দ্রকিশোরের সংসার জীবন শুরু হয়।
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর তিন ছেলে ও তিন মেয়ে ছিল। ছেলেরা হলেন সুকুমার, সুবিনয় ও সুকমল। মেয়েরা হলেন সুখলতা, পুণ্যলতা ও শান্তি লতা।
Also Read- Click Here
উপেন্দ্রকিশোর সাহিত্যিক জীবনে প্রকাশিত গ্রন্থ
উপেন্দ্রকিশোর সাহিত্যিক জীবনে প্রকাশিত গ্রন্থ: উপেন্দ্রকিশোর শিশু ও কিশোরদের জন্য যে সকল সাহিত্য পুস্তক রচনা করেছেন, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল ১৮৯৬ সালে প্রকাশিত ”ছেলেদের রামায়ণ”। ১৯০৩ সালে প্রকাশিত ”সেকালের কথা”। ১৯০৮ সালে প্রকাশিত ”ছেলেদের মহাভারত” 1909 সালে প্রকাশিত ”মহাভারতের গল্প”। ১৯১০ সালে প্রকাশিত ”টুনটুনির বই”।
১৯১১ সালে প্রকাশিত ”ছোট্ট রামায়ণ” এবং ১৯১৫ সালে প্রকাশিত ”গুপী গাইন বাঘা বাইন”। এই এই গ্রন্থ গুলির মধ্যে সবথেকে অন্যতম প্রকাশিত গ্রন্থ হল ”টুনটুনির বই”।
মুদ্রণ শিল্প
মুদ্রণ শিল্প: উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী নিজের প্রতি ভাই ও বুদ্ধি লাগিয়ে একটি রুমে তিনি নিজের আকার ষ্টুডিও খোলেন এবং সেখানে হাফ টন ব্লক প্রিন্টিং নিয়ে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। বিদেশ থেকে নিজের টাকায় অনেক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম নিয়ে আসেন।
ছাপাখানার ব্যবসার পাশাপাশি হাজার 897 সাল থেকেই ব্রিটেনের গ্রাফিক আর্টের বিখ্যাত ‘জেনারেল পেনরোজ অ্যানুয়াল ‘এ প্রবন্ধে প্রকাশিত হতে শুরু করল। অল্প দিনে উপেন্দ্রকিশোর এর মুদ্রণ শিল্পের উন্নতি ঘটে।
উপসংহার
উপসংহার: বাল্যকাল থেকে উপেন্দ্রকিশোর মেধা প্রবৃত্তির ছিলেন। তার নানামুখী যোগ্যতার সন্দেশ আজও সমাজকে তার লেখার রচনা গ্রন্থগুলির মধ্যে দিয়ে যায়। তার মধ্যে নানামুখী যোগ্যতার সমাবেশ ঘটল তিনি প্রধানত নির্মল আনন্দ রসিক শিশু সাহিত্যিক রূপে অধিক পরিচিত। এই শিশু সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোরের অবশেষে ১৯১৫ সালের.২০ ডিসেম্বরে মৃত্যু হয় মাত্র ৫২ বছর বয়সে।