Guruchand Thakur Biography in Bengali || গুরুচাঁদ ঠাকুর
Guruchand Thakur Biography in Bengali : গুরুচাঁদ ঠাকুর: শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুর যিনি সমাজের নিচু স্তরের মানুষের শিক্ষা আদায়ের অধিকারের প্রধান ব্যক্তিত্ব। ১৮৪৬ খ্রিস্টাব্দে ১৩ ই মার্চএবং বাংলায় ১২৫৩ সালে পহেলা চৈত্র মাসে শুক্রবার পবিত্র ফাল্গুনী পূর্ণ পূর্ণিমায় শ্রী শ্রী গুরুচাঁদ কাশিয়ানী থানার অন্তর্গত ঠাকুর ওড়াকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
তার পিতা হরিচাঁদ ঠাকুর এবং মাতা শান্তি দেবী ।শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ Guruchand Thakur ঠাকুর তার সাত বছর বয়সে পদ্ম বিজয় দশরথের কাছ থেকে , পাঠশালায় শিক্ষা গ্রহণ করেন। এরপরে হরিচাঁদ ঠাকুর তাকে স্কুলে ভর্তি জন্য নিয়ে গেলে নিচু জাত বলে তাকে স্কুলে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি ।
গুরুচাঁদ ঠাকুরের শিক্ষা জীবন
তখন হরিচাঁদ ঠাকুর শ্রী শ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুরকে মুসলিমদের মক্তবে ভর্তি করিয়ে দিলেন। মক্তবের পড়াশোনা শেষে উচ্চ বর্ণীয়দের কারণে আর স্কুলে ভর্তি হতে পারল না। শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর তার পুত্র গুরুচাঁদ ঠাকুরকে উচ্চ শিক্ষার জন্য অনেক বিদ্যালয়ে প্রবেশের জন্য প্রচেষ্টা করেছিলেন কিন্তু সমাজের ( society) কিছু নিচু মানসিকতা ব্যক্তিদের কারণে গুরুচাঁদ ঠাকুরের শিক্ষা জীবন এই পর্যন্তই থেকে যায়।
বিদ্যালয়ে শিক্ষা না পেয়েও গুরুচাঁদ ঠাকুর Guruchand Thakur হার মানেননি ,তিনি বাড়িতে বসেই বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ (scriptures) পড়ে জ্ঞান অর্জন করতে শুরু করেন । পরবর্তীতে শ্রী শ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুর নিজের পিতার ইচ্ছা মতই সত্যভঙ্গা দেবী কে বিবাহ করেন । এই বিবাহের মধ্যে দিয়ে তিনি সংসার জীবনে প্রবেশ করেন।
Also Read- Click Here
মতুয়াদের নেতৃত্বে
মতুয়াদের নেতৃত্বে: শ্রী শ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুর ১৮৬৭ সালে প্রথম কর্মজীবনে ব্যবসা শুরু করেন ,ব্যবসা করেই সংসার চালাতেন। শ্রী শ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুরের চারজন ছেলে ও একজন মেয়ে ছিলেন, এরা হলেন- শশীভূষণ, সুধন্য, উপেন্দ্র ও সুরেন্দ্র এবং কন্যার নাম ছিল- করুণাময়ী ।
1872 সালে শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুর শিক্ষা আন্দোলনের সূচনা করেন। ১৮৭২ সালে গুরুচাঁদ ঠাকুরের নির্দেশে শিক্ষার দাবিতে মতুয়াদের (Matua’s) নেতৃত্বে একটি বড় মিছিল করেন ।1880 সালে গুরুচাঁদ ঠাকুর নিজগৃহে পাঠশালা স্থাপন করেন। এবং তিনি সকলের উদ্দেশ্যে বলতেন-
”ম রি কিংবা বাঁচি তাতে ক্ষতি নাই
গ্রামে গ্রামে পাঠশালা গড়ে তোলা চাই ”।
Guruchand Thakur Biography
নমঃশূদ্র ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন
নমঃশূদ্র ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন : ১৮৮১ সালে দত্ত ডাঙ্গায় ঈশ্বর গাহিনীর বাড়িতে শ্রদ্ধা অনুষ্ঠান উপলক্ষে এক বিশাল জাগরণী সভার সভাপতিত্ব করেন শ্রী শ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুর মহাশয়। এই সভায় নিম্ন জাতির শিক্ষা বিস্তারের পরিকল্পনা ও অগ্রাধিকার লাভ করেছিল ।
১৮৮১ সালে গুরুচাঁদ ঠাকুরের নির্দেশে খুলনা শহরে নমঃশূদ্র ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন (Welfare Association) সংগঠিত হয় ।১৯৬০ সালে গুরুচাঁদ ঠাকুরের নির্দেশে নমঃশূদ্র সুরত নামে একটি পত্রিকা প্রকাশিত হয় ।
১৯০৬ সালে ডঃ সি এস মিড সাহেব খ্রিষ্ট ধর্মের প্রচার ও দরিদ্র সেবা করার জন্য ফরিদপুরে আসেন, এরপরে গুরুচাঁদ ঠাকুরের কাছেও আসেন তিনি এবং গুরুচাঁদ ঠাকুরের অলৌকিক শক্তি দেখে ডঃ সি এস মিড ,গুরুচাঁদ ঠাকুরের অনুরাগী হয়ে ওঠে।
Guruchand Thakur Biography in Bengali || বিদ্যালয় স্থাপন
Guruchand Thakur Biography in Bengali :বিদ্যালয় স্থাপন: এরপর গুরুচাঁদ ঠাকুরের সাথে প্রত্যেকটি আন্দোলনে ব্যাপক সহায়তা করেন । ডঃ সি এস মিড এর সহায়তায় ১৯০৮ সালে একটি উচ্চ বিদ্যালয় নির্মাণের ফলে নিম্ন শ্রেণীর মানুষের মধ্যে শিক্ষা বিস্তারের সাড়া পায়। ১৯০৮ সালে ওড়াকান্দি একটি নারী শিক্ষা প্রশিক্ষণ স্কুল স্থাপন করেন ।
১৯১০ সালে তৎকালীন ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ওড়াকান্দিতে পরিদর্শনে আসেন তার কাছে গুরুচাঁদ ঠাকুর শিক্ষা, , ছাত্রাবাস ও স্বাস্থ্য জন্য দাবি জানান।১৯২৩ সালে খোলার নিম্নবর্গের মানুষের উন্নয়নের উদ্দেশ্যে সভায় সভাপতিত্ব করেন গুরুচাঁদ ঠাকুর ।
১৯৩১ সালের মধ্যে নমঃশূদ্র জাতির ছেলেমেয়েদের জন্য ১০৬৭ টি বিদ্যালয় এবং পিছিয়ে রাখা সমাজের সন্তানদের জন্য 559 টি এবং অধিবাসী ছেলে মেয়েদের জন্য বর্ধমান ডিভিশনে ২৪৬ টি বিদ্যালয় স্থাপন করেন । মোট মিলিয়ে গুরুচাঁদ ঠাকুর ১৮১২ টি স্কুল প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
Pratidin24ghanta.com